বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আবারও গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। সংঘর্ষ ঘিরে আবারও বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা।
সোমবার (১১ মার্চ) রাত পর্যন্ত বিজিপির মোট ১৭৯ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
রাতে বিজিবি সদরদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকা দিয়ে একদিনে এখন পর্যন্ত বিজিপির ১৭৯ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার ১২ দিনের মাথায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যসহ (বিজিপি) ৩৩০ নাগরিককে ফেরত নেয় মিয়ানমার। ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়া ইনানী নৌ-বাহিনীর জেটিঘাট থেকে জাহাজে করে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের জামছড়ি সীমান্তে ইউপি সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সোমবার বিকাল ৪টার দিকে জামছড়ি এলাকার মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাবের আহমদকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সোমবার বিকালে সীমান্ত এলাকা জামছড়ি মসজিদের পাশে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করছিলেন ইউপি সদস্য সাবের আহমদ। এ সময় মিয়ানমার থেকে আসা একটি গুলি তার কোমরে লাগে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’ এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয় প্রশাসনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান ও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা গুলিবিদ্ধ কেউ হাসপাতালে এসেছে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি।
বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা ছাড়াও মিয়ানমারের বিভিন্ন স্থানে জান্তা সৈন্যদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধবিগ্রহ বেশ প্রকট হয়ে উঠেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্ত আরাকানে এলাকায় আরাকান আর্মি (এএ), অন্যান্য এলাকায় পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) ও জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন (ইএও) জান্তা শাসকের বিভিন্ন সামরিক ও প্রশাসনিক লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ বাড়িয়েছে বলে ইরাবতী জানিয়েছে। গণমাধ্যমটি বলছে, মিয়ানমার জান্তা গত চার দিনে একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেলসহ আরও সৈন্য হারিয়েছে এবং কৌশলগত দুর্গসহ ঘাঁটিও হারিয়েছে। গণমাধ্যমটি বলছে, আরাকান আর্মি গত শুক্রবার ইয়ে তুত উইন নামে এই সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে। এর আগে আরাকান আর্মি কৌশলগত কমান্ডার কর্নেল মায়ো মিন কো কো, মেজর স তোয়ে, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিও থু অংসহ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করে।
আরাকানের বাইরে চীনের সীমান্তের কাছে গত সপ্তাহে কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি জান্তার সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ২০টির বেশি ফাঁড়ি ও ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে এবং সেখানে এখনও যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে বলে ইরাবতীর খবর।