মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো কিডনি। এর মাধ্যমেই শরীরের সব ধরনের বর্জ্য পদার্থ বের হয়ে যায় মূত্রের মাধ্যমে। এ ছাড়াও শরীরের তরল ভারসাম্য রক্ষার কাজটিও করে কিডনি।
তবে পর্যাপ্ত পানি পান না করা, মূত্র চেপে রাখা ও ক্ষতিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে কিডনি বিকল হয়ে পড়তে পারে। আর কিডনিতে কোনো সমস্যা হলে দ্রুত কেউই টের পান না।
ফলে রোগ অনেকটা ছড়িয়ে পড়তেই চিকিৎসকের কাছে যান রোগী। এরই মধ্যে কিডনিতে যেই ক্ষতি হয়েছে তা আর ফেরানো সম্ভব হয় না। তাই কিডনি সমস্যার কোনো লক্ষণই অগ্রাহ্য করা চলবে না।
বর্তমানে কিডনি রোগী অতীতের তুলনায় অনেকে বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনির রোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো ডায়াবেটিস। রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে কিডনি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আর একবার শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি হলে সেই ক্ষতি আর কাটানো যায় না। তখন রোগ যেন আর না বাড়তে পারে সেই চিকিৎসা দেন চিকিৎসকরা। তবে রোগীর অগ্রগতি আটকানোর চেয়ে রোগটিকে প্রথমেই প্রতিরোধ করতে পারলে সবচেয়ে ভালো।
ডায়াবেটিস আক্রান্তসহ বেশিরভাগ মানুষই কিডনির অসুখের কোনো লক্ষণ জানেন না। এসব লক্ষণ জানা থাকলে রোগ শনাক্তে সহজ হয়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কিডনি রোগের প্রাথমিক ৪ লক্ষণ-
>> ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা যেমন ডায়াবেটিসের ইঙ্গিত দেয়, ঠিক একইভাবে কিডনি রোগেরও প্রাথমিক লক্ষণ এটি। প্রস্রাবের পরিমাণ ও সংখ্যাও আমাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক কথা বলে। দিনে ৬-১০ বার প্রস্রাব হলো স্বাভাবিক।
তবে কিডনির সমস্যা থাকলে বারবার প্রস্রাব হতে পারে। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তও বের হতে পারে। তবে সব সময় বেশি প্রস্রাব হবে এমন নয়। অনেক সময় কিডনির সমস্যার কারণে রোগীর প্রস্রাব কমেও যেতে পারে।
>> মায়ো ক্লিনিকের তথ্য বলছে, কিডনির সমস্যায় দুর্বলতা প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম। এক্ষেত্রে কিডনি যত খারাপ হতে থাকে, শরীরের অবস্থাও ঠিক ততটাই খারাপ হয়। সব সময় দুর্বল বোধ করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
>> কিডনির কাজ হলো শরীর থেকে সব ধরনের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া। তবে কিডনিতে রোগ বাসা বাঁধলে, এই কাজ ঠিকমতো হয় না। ফলে ত্বকে পড়ে এর ছাপ।
এক্ষেত্রে চুলকানি ও ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এসব চর্মরোগ কেন হচ্ছে তা জানতে পরীক্ষা করান ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
>> কিডনি শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য আনতে সাহায্য করে। তবে কিডনি খারপ হলে সেই কাজটা ঠিকমতো হয় না। ফলে দেখা দেয় সমস্যা। এই কারণে শরীরে ব্য়থা হতে পারে।
এমনকি হাত-পা ফুলেও যেতে পারে। বিশেষ করে পায়ের পাতায় পানি জমে যাওয়া কিডনি রোগের গুরুতর এক লক্ষণ।
সূত্র: হেলথলাইন/মায়োক্লিনিক